চিট ফান্ড খুলে মিডিয়া ব্যারন হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন সারদা গোষ্ঠীর কর্ণধার সুদীপ্ত সেন৷ কিন্তু মিডিয়া ব্যবসাই কি তাঁর পতনের কারণ? পুলিশ সূত্রের খবর, এমন স্বীকারোক্তি করেছেন খোদ সুদীপ্ত সেন৷


বেহালায় জমির কারবারি থেকে সারদা গোষ্ঠীর কর্ণধার৷ আকাশ ছুঁতে চেয়েছিলেন সুদীপ্ত সেন৷ কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল তাঁর সাম্রাজ্য৷ 
কিন্তু কেন এমন হল? পুলিশ সূত্রে খবর, পতনের জন্য নিজের মিডিয়া ব্যবসাকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন সুদীপ্ত সেন৷ বিধাননগর পুলিশের দাবি, কলকাতায় আনার আগে জেরার মুখে সুদীপ্ত জানান,মিডিয়া ব্যবসায় নেমে বিপুল ক্ষতি হয়েছে৷ সেজন্যই আজ এই অবস্থা৷
অথচ, সুদীপ্ত সেনের ঘনিষ্ঠদের একাংশের দাবি, গত বছর সংস্থার বার্ষিক সাধারণ সভায় তিনি বলেছিলেন, 'কোনও সংবাদসংস্থা সারদা গোষ্ঠীর বাইরে থাকবে না৷ আমি এখন যে সংবাদ সংস্থাই দেখছি, সেটাই কিনে ফেলতে ইচ্ছা করছে৷ আপনারা সঙ্গে থাকলে আগামী দিনে হয়ত সবই কিনে ফেলতে পারব।'
হয়েওছিল তাই৷ 
বাংলা সংবাদমাধ্যমের জগতে আচমকাই প্রবেশ করে রাতারাতি প্রায় ডজন খানেক সংবাদপত্র, নিউজ চ্যানেল, ম্যাগাজিনের মালিক হয়ে যান সুদীপ্ত সেন৷
তারা মিউজিক,তারা নিউজ, সাউথ এশিয়া টিভি,চ্যানেল টেন-এর মতো টিভি চ্যানেল এবং বাংলা দৈনিক সকালবেলা, কলম,বাংলা ম্যাগাজিন পরমা, ইংরেজি দৈনিক বেঙ্গল পোস্ট, উর্দু দৈনিক আজাদ হিন্দ,হিন্দি দৈনিক প্রভাত বার্তা এবং গুয়াহাটি থেকে প্রকাশিত সেভেন সিস্টার্স পোস্ট  সারদা গোষ্ঠীর মালিকানাধীন হয়ে যায়৷ 
পুলিশের দাবি, সারদা একটি সংস্থার রিসেপসনিষ্ট রেশমি লাহিড়ি জানিয়েছেন,  সারদার সঙ্গে যুক্ত এক তৃণমূল সাংসদ এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ সারদার মিডিয়া গ্রুপের ভাইস প্রেসিডেন্ট সোমনাথ দত্ত মাসখানেক আগে মিডল্যান্ড পার্কের সদর দফতরে আসেন৷ সেখানে সুদীপ্ত সেনকে হুমকি দেন তাঁরা৷ দাবি করেন, চ্যানেল টেন তাঁদের নামে লিখে দিতে হবে৷ রাজি হননি সুদীপ্ত৷ চাপের মুখে কেঁদে ফেলেন তিনি৷ বলেন, আমি এতদিন ভাল ছিলাম, তোমাদের জন্য মিডিয়া ব্যবসায় ঢুকতে হল৷ আমাকে চাপ দিও না,তাহলে তোমাদের নাম বলে দেব৷  
গোয়েন্দারা তাই মনে করছেন, সারদা গোষ্ঠীর মিডিয়া গ্রুপের কাউকে জেরা করতে পারলেই জানা যাবে আরও অনেক তথ্য৷ আর এই সূত্রেই উঠে আসছে একটি নাম - সোমনাথ দত্ত৷ 
কে এই সোমানাথ দত্ত? পুলিশ সূত্রে খবর, সোমনাথ দত্তর বাড়ি বাউবাজার এলাকায়৷ লন্ড্রির ব্যবসা দিয়ে শুরু, তারপর ধাপে ধাপে সারদা গোষ্ঠীর মিডিয়া গ্রুপের ভাইস প্রেসিডেন্ট৷ সূত্রের খবর, বাম আমলে উত্তর ২৪ পরগনার এক সিপিএম নেতার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন তিনি৷ তখন থেকেই উত্থান শুরু৷ গত লোকসভা নির্বাচনের সময় 
সারদা ঘনিষ্ঠ এক তৃণমূল সাংসদেরও ঘনিষ্ট হয়ে ওঠেন সোমনাথ৷ ব্যাপক যোগাযোগ গড়ে ওঠে টালিগঞ্জের তারকাদের সঙ্গে৷ 
২০০৯ লোকসভা নির্বাচনের সময় যখন বীরভূমের তৃণমূল প্রার্থীর নাম ঘোষণা হয়, তখন অভিনেত্রী শতাব্দীর সঙ্গেই সোমনাথ দত্ততে প্রথম দেখেন এলাকার মানুষ৷ শতাব্দী এবং রামপুরহাটের তৃণমূল বিধায়ক আশিস বন্দ্যোধ্যায়ের সঙ্গে হুডখোলা গাড়িতে রোড শোও করতে দেখা যায় তাঁকে৷যদিও শতাব্দীর দাবি, সোমনাথের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক পারিবারিক৷ 
সারদা গোষ্ঠীর ব্রোসিওরে গ্লোবাল অটোমোবাইলের পাতায় ছাপা শতাব্দী রায়ের ছবি দেখিয়ে বিরোধীদের দাবি, সারদার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর ছিলেন শতাব্দী৷ যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সাংসদ৷ 
সারদা গোষ্ঠীর মিডিয়া গ্রুপের ভাইস প্রেসিডেন্ট সোমনাথ দত্ত এখন থাকেন সল্টলেকে৷ ঠিকানা, আই এ ২৯৬৷ এই বহুতলের তৃতীয় তলে সোমনাথ দত্তর বাড়িতে মঙ্গলবার তল্লাশি চালায় পুলিশ৷ জেরা করা হয় সোমনাথকে৷ 
মিডিয়ার অনুষ্ঠান হোক বা অন্য কোনও অনুষ্ঠান৷ সুদীপ্ত সেনের জায়গায় প্রায়ই দেখা যেত সোমনাথ দত্তকে৷ বিধাননগর পুরসভার চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তীর সঙ্গেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছে তাঁকে৷ মহাকরণের সামনে অ্যাম্বুলেন্স উদ্বোধনে দেখা গিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে৷ পুলিশের অনুমান, সোমনাথ দত্তকে জেরা করলেই মিলতে পারে সুদীপ্ত সেন সম্পর্কে জরুরি তথ্য৷ 

http://www.abpananda.newsbullet.in/state/34/36013

 

কলকাতা: সপার্ষদ গ্রেফতার হয়েছেন নিজে কিন্তু রাজ্যে ক্ষমতাসীন দলকে প্রবল অস্বস্তিতে ফেলে দিলেন সুদীপ্ত সেন।গত ৬ এপ্রিল সিবিআইকে লেখা চিঠিতে সারদা-কর্তা তৃণমূলের দুই সাংসদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন যাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক শোরগোল, আলোড়ন ছড়িয়ে পড�