4.5 Million To Sit In Exam For 35 Thousand Posts!
Sign in

4.5 million to sit in exam for 35 thousand posts!

পঁয়ত্রিশ হাজার শূন্যপদের জন্য পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৪৫ লক্ষেরও বেশি।বাংলায় প্রাথমিক শিক্ষক পদে নিযুক্তির জন্য সংখ্যার বিচারে যে সর্ববৃহত পরীক্ষা হতে চলেছে, তা পরিষ্কার করে দেয়, এই রাজ্যে বেকারত্ব কি ভয়াবহ সমস্যা।পরীক্ষায় বসলেই যে নিয়োগ হবে, তাঁর নিশ্চয়তা নেই।যেহেতু সেই বাম জমানা থেকেই রঘুকুল পরম্পরা চলে এসেছে, চাকরি জুটবে দলবদ্ধতার নিরিখে। সংরক্ষণ অনুযায়ী চাকরি এই রাজ্যে সবচেয়ে কম।প্রথমতঃ সংরক্ষণ অনুযায়ী জাতি প্রমাণপত্র পাওয়া মুশ্কিল।পরীক্ষা পাশ করেও সাক্ষাত্কারে যোগ্য প্রার্থী নেই বলে হামেশা সংরক্ষণ বাতিল হয়েই থাকে।তাছাড়া, অতীতেও দেখা গিয়েছে, পরীক্ষার পর মামলা মোকদ্দমায় শেষ পর্য়ন্ত নিয়োগ পচ্ছে না, হলেও বাতিল হয়ে যাচ্ছে।উপরন্তু পন্চায়েত নির্বাচন স্থগিত হয়ে যাওয়ায বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে কাজের জন্য কেন্দ্র সরকারের বরাদ্দও বাতিল হওয়ার উপক্রম। 


পলাশ বিশ্বাস 

আইপিএল উত্সব আসন্ন।বিনোদনের একের পর এক বিস্ফোরণে, সরকারি আয়োজনে খামতি নেই। বিনোদন বরাদ্দে আর্থিক সংকট বিবেচিত হয় না।লগ্নির পরিবেশ নেই।শিল্পের জমিতে প্রমোটার বিল্ডার আইপিএল রাজ চলছে।তবু লক্ষ লক্ষ বেকারের পরীক্ষার অন্ততঃ ব্যবস্থা করে অবসাদ থেকে সাময়িক মুক্তির আয়োজনকে স্বাগত জানাতেই হয়

পঁয়ত্রিশ হাজার শূন্যপদের জন্য পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৪৫ লক্ষেরও বেশি।বাংলায় প্রাথমিক শিক্ষক পদে নিযুক্তির জন্য সংখ্যার বিচারে যে সর্ববৃহত পরীক্ষা হতে চলেছে, তা পরিষ্কার করে দেয়, এই রাজ্যে বেকারত্ব কি ভয়াবহ সমস্যা।পরীক্ষায় বসলেই যে নিয়োগ হবে, তাঁর নিশ্চয়তা নেই।যেহেতু সেই বাম জমানা থেকেই রঘুকুল পরম্পরা চলে এসেছে, চাকরি জুটবে দলবদ্ধতার নিরিখে। সংরক্ষণ অনুযায়ী চাকরি এই রাজ্যে সবচেয়ে কম।প্রথমতঃ সংরক্ষণ অনুযায়ী জাতি প্রমাণপত্র পাওয়া মুশ্কিল।পরীক্ষা পাশ করেও সাক্ষাত্কারে যোগ্য প্রার্থী নেই বলে হামেশা সংরক্ষণ বাতিল হয়েই থাকে।তাছাড়া, অতীতেও দেখা গিয়েছে, পরীক্ষার পর মামলা মোকদ্দমায় শেষ পর্য়ন্ত নিয়োগ পচ্ছে না, হলেও বাতিল হয়ে যাচ্ছে।উপরন্তু পন্চায়েত নির্বাচন স্থগিত হয়ে যাওয়ায বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে কাজের জন্য কেন্দ্র সরকারের বরাদ্দও বাতিল হওয়ার উপক্রম। 

আগামিকাল প্রাথমিক শিক্ষকপদে নিয়োগের টেট পরীক্ষা। পঁয়ত্রিশ হাজার শূন্যপদের জন্য পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৪৫ লক্ষেরও বেশি। পরীক্ষাকেন্দ্রের সংখ্যা সাড়ে ছ হাজার। পরীক্ষার ঠিক আগের দিন একাধিক সমস্যার মুখে বিভিন্ন জেলার পরীক্ষার্থীরা। 

সবচেয়ে বড় সমস্যা পরীক্ষার্থীদের অ্যাডমিট কার্ডে পরীক্ষাকেন্দ্রের নাম দেওয়া থাকলেও উল্লেখ করা হয়নি ঠিকানা। ফলে কিভাবে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে হবে সেবিষয়ে ধন্দে রয়েছেন তাঁরা। 

নদিয়ার বহু পরীক্ষার্থী এখনও জানতে পারেননি কোন কেন্দ্রে তাঁরা পরীক্ষা দেবেন। অনেকের ক্ষেত্রে ইন্টারনেটে পাঠানো পরীক্ষাকেন্দ্রের সঙ্গে মিল নেই অ্যাডমিট কার্ডে দেওয়া পরীক্ষাকেন্দ্রের। ফলে পরীক্ষা কেন্দ্র খুঁজে পেতে নাজেহাল দশা তাঁদের। 

অভিযোগ, যে সব স্কুলে পরীক্ষা কেন্দ্র করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছিল,  সেধরনের অনেক স্কুলে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় শেষ মুহূর্তে অন্য স্কুলে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের দেওয়া চব্বিশ ঘণ্টার হেল্প লাইনে ফোন করলেও কেউ ফোন ধরছেন না বলে  অভিযোগ। একই ধরনের সমস্যা দেখা দিয়েছে বীরভূম, পুরুলিয়া, জলপাইগুড়িতেও। টেট পরীক্ষার জন্য আগামিকাল সকাল এগারোটা থেকে পনেরো মিনিট অন্তর ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ।


এই সময়: রবিবার প্রায় ২২ লক্ষ পরীক্ষার্থী সারা রাজ্যে বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় বসছেন৷ সরকার এবং প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি ছিল, পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধের জন্য বাড়তি ট্রেন, মেট্রো ও বাস পরিষেবার ব্যবস্থা থাকবে৷ কিন্ত্ত রেল, মেট্রো এবং বেসরকারি পরিবহণ কর্তারা শনিবারও জানিয়ে দেন, এমন কোনও অনুরোধ তাঁরা পাননি৷ কেবল সরকারি বাস সংস্থাদেরই বাড়তি বাস নামাতে বলেছে সরকার৷ 

তা সত্ত্বেও অবশ্য বাড়তি বেসরকারি বাস পরিষেবা থাকার প্রতিশ্রীতি মিলেছে সংগঠনগুলির তরফে৷ এ ছাড়া, পূর্ব রেলের তরফে জানানো হয়, রাজ্য সরকার অনুরোধ না করলেও নিজেদের উদ্যোগেই রবিবার তাঁরা যে কোনও কাজের দিনের সূচি মেনেই গাড়ি চালাবেন৷ ব্যতিক্রম থাকবে কেবল শিয়ালদহ-লালগেলা রুটের মেমু পরিষেবা এবং শিয়ালদহ-বিমানবন্দর, বিমানবন্দর-দমদম ক্যান্টনমেন্ট/দমদম জংশন এবং মাঝেরহাট-বিমানবন্দর রুটের পরিষেবাগুলি৷ 

দক্ষিণ-পূর্ব রেলের তরফে জানানো হয়, তাঁরা রবিবারের পরীক্ষা সম্পর্কে কিছুই জানেন না৷ কাজের দিনের মতো ট্রেন চালানোর জন্য তাদের কোনও অনুরোধ করা হয়নি৷ এ অবস্থায় রবিবার বিশেষ ট্রেন চালানোর কোনও পরিকল্পনা নেই তাদের৷ 

মেট্রো রেলের তরফেও একই কথা জানানো হয়েছে৷ অন্যান্য দিন সকাল সাতটা থেকে মেট্রো পরিষেবা চালু হয়ে গেলেও রবিবার গাড়ি চলে বেলা দু'টো থেকে৷ এত শীর্ষ মেট্রোকর্তা শুক্রবার বলেন, 'বিশেষ ট্রেন চালানোর জন্য আমাদের কেউ অনুরোধ করলে তখনই বাড়তি পরিষেবার পরিকল্পনা করি আমরা৷ রবিবারের জন্য কেউ কোনও কিছু জানাননি৷ বাড়তি গাড়ি চালাতে হলে আমাদের কর্মীদেরও আগে থেকে জানিয়ে দিতে হয়৷ হঠাত্ অতিরিক্ত পরিষেবার কথা বললেই অনুরোধ রক্ষা করা সম্ভব নয়৷' 

অতীতে রবিবার সকালে কয়েকটি কেন্দ্রীয় সরকারি পরীক্ষার জন্য, এমনকি, ইডেন গার্ডেন্সে রাতের ক্রিকেট ম্যাচের পর দর্শকদের বাড়ি ফেরবার সুবিধের জন্যও বেশি রাতে ট্রেন চালিয়েছে মেট্রো৷ কিন্ত্ত, অভিজ্ঞতা হল, এ সব ট্রেনে চড়বার মত যাত্রী বিশেষ হয় না৷ ও দিকে, বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেটের তরফে দীপককান্তি সরকার বলেন, 'রাজ্য সরকার আমাদের বাড়তি বাস চালানোর জন্য কিছু বলেনি৷ সংবাদমাধ্যম থেকেই জেনেছি, লক্ষ লক্ষ পরীক্ষার্থী প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় বসছেন রবিবার৷ আমরা চেষ্টা করব, বাড়তি বাস চালানোর৷' জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেট-এর তরফে তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'সরকার আমাদের কিছু জানায়নি৷ কেবল সংবাদপত্রে পড়েছি৷ মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই শহর ও জেলায় পরীক্ষার্থীদের যাতে কোনও অসুবিধে না হয়, তার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করব৷' 

আর, সরকারের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে যে সরকারি বাস সংস্থাগুলি, তারা কী করবে? 'কলকাতা রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম' ও কলকাতা ট্রাম সংস্থার তরফে বলা হয়, পরিবহণ দফতর থেকে তাঁদের মৌখিক ভাবে বলা হয়েছে রবিবার যথা সম্ভব বেশি বাস চালাতে৷ সংস্থা কর্তৃপক্ষ জানান, রবিবার সাধারণত কম গাড়ি চলে৷ সরকারের অনুরোধ অনুযায়ী রবিবার বাড়তি বাস পথে নামানোর চেষ্টা করা হবে৷ তবে বাস্তব পরিস্থিতি হল, সামগ্রিক ভাবে পরিবহণে সরকারি বাসের ভূমিকা নেহাতই নগণ্য৷ 


 

রাজ্যে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বলবৎ স্থগিতাদেশ খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। অর্থাৎ, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ নিজেদের নির্ধারিত দিনেই শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা নিতে পারবে। বুধবার আদালতের এই নির্দেশের পরে পর্ষদ-কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এ বার তাঁরা নতুন পরীক্ষার দিন স্থির করে যথাসময়ে সংশিষ্ট সকলকে অবহিত করবেন। হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্তের সিঙ্গল বেঞ্চের জারি করা স্থগিতাদেশ রদ করলেও প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে কয়েকটি শর্ত এ দিন বেঁধে দিয়েছে বিচারপতি প্রণব চট্টোপাধ্যায় ও বিচারপতি তরুণ দাঁ’র ডিভিশন বেঞ্চ। শর্তগুলো হল: সফল পরীক্ষার্থীদের দু’টো আলাদা মেধা-তালিকা বানাতে হবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের জন্য একটা, প্রশিক্ষণহীনদের জন্য একটা। আগে প্রথম তালিকা থেকে নিয়োগ হবে। পরে দ্বিতীয় তালিকার প্রার্থীদের চাকরি দিতে পারবে পর্ষদ। এবং বিচারপতি করগুপ্তের আদালতে মূল মামলার ফলাফলের উপরেই যে ওই সব চাকরির ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে, ডিভিশন বেঞ্চ তা-ও জানাতে ভোলেনি। তাই এ দিনের নির্দেশ রাজ্য সরকারের পক্ষে স্বস্তিদায়ক হলেও পুরোপুরি নিশ্চিন্ত হওয়ারও বিশেষ অবকাশ নেই বলে আইন ও প্রশাসনের কোনও কোনও মহল মনে করছে।

পশ্চিমবঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষকের প্রায় ৪৪ হাজার পদ খালি। মোট আবেদনকারী ৫৫ লক্ষ, যাঁদের ১৪ হাজার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশের অর্থ: তালিম-পাওয়া (অর্থাৎ দু’বছরের ডিপ্লোমা-ইন-এলিমেন্টারি এডুকেশন, সংক্ষেপে ডিএলএড পাঠ্যক্রম উত্তীর্ণ) ১৪ হাজার প্রার্থীর মধ্যে যাঁরা পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়ে মেধা-তালিকায় ঠাঁই করে নিতে পারবেন, তাঁরা প্রথমে নিয়োগপত্র পাবেন। তার পরে প্রশিক্ষণহীন কৃতকার্যদের তালিকা থেকে নিয়োগ শুরু হবে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে প্রাথমিক শিক্ষকের শূন্য পদ পূরণের লক্ষ্যে গত ১৫ অক্টোবর সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল পর্ষদ। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, সাধারণ প্রার্থীদের সঙ্গে পরীক্ষায় বসতে হবে ডিএলএড’দেরও। কিন্তু পরীক্ষা ছাড়াই প্রশিক্ষিতদের নিয়োগের দাবিতে হাইকোর্টে যান ১ হাজার ডিএলএড আবেদনকারী। ওঁদের যুক্তি ছিল, এনসিটিই-র নিয়ম অনুযায়ী প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের সঙ্গে অন্যদের পরীক্ষা নেওয়া যায় না। ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন (এনসিটিই)-এর আইনজীবীও তাঁদের সমর্থন করেন। অন্য দিকে পর্ষদের বক্তব্য ছিল, প্রশিক্ষিতদের স্বীকৃতি দিতেই তাঁদের নিয়োগ-পরীক্ষায় অতিরিক্ত ২০ নম্বর দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। শেষমেশ আবেদনকারীদের বক্তব্যকে আপাতগ্রাহ্য ধরে হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত জানিয়ে দেন, পরবর্তী নির্দেশ পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষক পদে কোনও পরীক্ষা পর্ষদ নিতে পারবে না। যুক্তি হিসেবে তিনি বলেছিলেন, ৫৫ লক্ষ পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা নিতে কয়েক কোটি টাকা খরচ হবে। চূড়ান্ত রায় রাজ্যের বিপক্ষে গেলে টাকাটা জলে যাবে।

সিঙ্গল বেঞ্চের স্থগিতাদেশটিকে পর্ষদ ও রাজ্য সরকার পৃথক ভাবে চ্যালেঞ্জ করেছিল বিচারপতি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে। তাতে বলা হয়, সকলের জন্য শিক্ষার অধিকার আইনে সংবিধানের ২১(ক) ধারা মোতাবেক শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা রাজ্য সরকারই ঠিক করবে, সেখানে এনসিটিই বা অন্য কেউ নাক গলাতে পারে না। সংবিধানিক দায়িত্ব বড়, নাকি অর্থ খরচ, বেঞ্চের সামনে সে প্রশ্নও রাখা হয়েছিল। দু’পক্ষের সওয়াল শেষে ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন স্থগিতাদেশ খারিজ করে দিয়ে বলেছে: বহু ছেলে-মেয়ে চাকরি পাবে। শিক্ষকের অভাবে অনেক স্কুল চালানো যাচ্ছে না, রাজ্য সরকারের হাতে টাকাও রয়েছে। তাই পরীক্ষা বন্ধ করার কোনও মূল্য নেই। আর এই নির্দেশের মাধ্যমে হাইকোর্ট রাজ্য সরকারের ব্যাখ্যাকেই কিছুটা মান্যতা দিল বলে আইনজীবী মহলের একাংশের অভিমত। আবার নিয়োগ-পরীক্ষা গ্রহণে সবুজ সঙ্কেত দিলেও ডিভিশন বেঞ্চ কিন্তু এ দিন জানিয়ে দিয়েছে, বিচারপতি করগুপ্তের আদালতে থাকা মূল মামলাটির নিষ্পত্তির উপরেই প্রার্থীদের চাকরির ভবিষ্যৎ নির্ভরশীল। সে ক্ষেত্রে মামলায় সরকারপক্ষের হার হলে রাজ্যকে ফের ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করতে হবে। পর্ষদ কী বলছে? প্রাথমিক ভাবে স্থির হয়েছিল, নিয়োগের পরীক্ষা নেওয়া হবে ২৩ ডিসেম্বর। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নতুন দিনক্ষণ এখনও স্থির হয়নি। পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য জানান, ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ খতিয়ে দেখে তাঁরা পরীক্ষার নতুন দিন চূড়ান্ত করবেন।

আনন্দবাজার পত্রিকা

 

 

 

কলকাতা: ৪৫ লাখ পরীক্ষার্থীর মধ্যে প্রাথমিকে টেট পরীক্ষার কয়েক ঘন্টা আগেও বিভ্রান্তি চরমে৷ বহু পরীক্ষা কেন্দ্রের ঠিকানা যথার্থ, সঠিক নয় বলে অভিযোগ জানিয়েছেন পরীক্ষার্থীরা৷ এমনকি হেল্প লাইন থেকেও সহায়তা মিলছে না বলেও অভিযোগ৷ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ওয়েবসাইট দেখার আর্জি জানিয়েছে পরীক্ষার্থীদের৷

রাজ্যের বিভিন্ন প্রাথমিক স্কুলে ৩৫ হাজারেরও বেশি শিক্ষক-পদ পূরণের জন্য পরীক্ষা রবিবার৷ নানা সময়ে প্রার্থীরা মামলা ঠুকে দেওয়ায় নিয়োগ প্রক্রিয়া পিছিয়ে যায়৷ অবশেষে আইনি জটিলতা কাটিয়ে পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ নিয়োগ পরীক্ষার নির্ঘণ্ট ঘোষণা করে৷ ৩৫ হাজারেরও বেশি শূন্যপদের জন্য আবেদন করেন ৪৫ লক্ষ পরীক্ষার্থী৷  পরীক্ষার্থীর সংখ্যা হিসেবে এটা এরাজ্যে রেকর্ড৷ এর আগে মাধ্যমিকের পরীক্ষা দেওয়ার রেকর্ড ছিল সাড়ে দশ লক্ষ পরীক্ষার্থীর৷ এমনকি পৃথিবীর কয়েকটি দেশের জনসংখ্যাও অন্তত ৪৫ লক্ষ নয়৷ অথচ এমন পরীক্ষার ব্যবস্থাপনায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন পরীক্ষার্থীরা৷ অনেক পরীক্ষার্থীর অভিযোগ, অ্যাডমিট কার্ডে পরীক্ষা কেন্দ্র হিসেবে যে স্কুলের নাম রয়েছে, বাস্তবে তার অস্তিত্বই নেই৷ কয়েকজন পরীক্ষার্থীর অভিযোগ, প্রান্তপল্লি হাইস্কুল বলে কোনও স্কুলের ঠিকানাও খুঁজে পাননি তাঁরা৷ বেহালা থানার সঙ্গে যোগাযোগ করেও এমন কোনও স্কুলের হদিশ তাঁরা পাননি বলে অভিযোগ তাঁদের৷ 

পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিটি জেলায় একটি করে অতিরিক্ত কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে৷ কিন্তু পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, কোথায় পরীক্ষা দেবেন, কী ভাবে দেবেন, তা পরীক্ষার কয়েক ঘণ্টা আগেও বুঝে উঠতে পারছেন না৷ এবিষয়ে জেলা-জেলায় প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ সাহায্য করবে বলে পর্ষদ সূত্রে জানানো হয়েছে৷

এমনকি পর্ষদ সূত্রে তিনটি হেল্প লাইনের নম্বর দিয়েছে পর্ষদ৷ সেই নম্বরগুলি হল ০৩৩-২৩৩৪৮৯৮৩, ২৩৫৯৮১৩৫, ২৩২১১২০১৷ অথচ পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, একটি নম্বরে ফোন পাওয়াই যাচ্ছে না৷ বাকি দুটিতেও যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না৷ ফলে বাড়ছে ভোগান্তি৷ অবশ্য, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ সূত্রে জানানো হয়েছে, ২১টি থানায় যান্ত্রিক কারণে কয়েকজন পরীক্ষার্থীর অ্যাডমিটে থাকা ভুল সংশোধন করা হয়েছে৷ ওয়েবসাইটের মাধ্যমেও যাবতীয় তথ্য জানানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ এদিকে পরীক্ষার্থীদের সুবিধার্থে রবিবার সকাল ১১টা থেকে ১৫ মিনিট অন্তর মেট্রো চলবে৷ তবে প্রশ্ন উঠছে, যেখানে ৪৫ লক্ষ পরীক্ষার্থী, সেখানে কেন আলাদা তত্পরতা দেখায়নি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ? লক্ষ লক্ষ পরীক্ষার্থীর ভবিষ্যত্ যেখানে জড়িয়ে, সেখানে পর্ষদের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে৷ (ফাইল চিত্র)

http://www.abpananda.newsbullet.in/state/34/35167

প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে শীর্ষ আদালতে ধাক্কা খেল রাজ্য

প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে আদালতে ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার। নিয়োগের ক্ষেত্রে প্যারা টিচারদের বয়সে ছাড় দিতে হবে বলে রাজ্যকে  নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। চলতি নিয়োগের ক্ষেত্রেই বিষয়টি প্রাথমিকে নিয়োগের ক্ষেত্রে বয়সে ছাড়ের দাবিতে প্রথমে হাইকোর্ট, পরে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন প্যারা টিচাররা। 

দুহাজার এগারোর দোসরা ফেব্রুয়ারি প্যারাটিচারদের পক্ষে রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু, রাজ্যে সরকার বদলের পর সেই রায় কার্যকর হয়নি। এরপর প্যারা টিচারদের সংগঠন সুপ্রিম কোর্টে আদালত অবমাননার মামলা করে। বৃহস্পতিবার, বিচারপতি আফতাব আলম ও বিচারপতি রঞ্জনা দেশাই তাঁদের রায়ে জানান, দুহাজার এগারোর দোসরা ফেব্রুয়ারির নির্দেশই বলবত্‍ থাকবে। এ দিন, রাজ্য সরকারের তরফে আদালতের নির্দেশ কার্যকর করার কথা হলফনামা দিয়ে জানানো হয়। 

প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর থেকেই শুরু হয়েছে একের পর এক বিতর্ক। দৃষ্টিহীনদের নিয়োগ, প্রশিক্ষিত প্রার্থী ও প্রশিক্ষণহীনদের জন্য আলাদা তালিকা তৈরির মতো নানা বিষয়ে আদালতে ধাক্কা খেয়েছে রাজ্য সরকার। অসম্পূর্ণ ও ত্রুটিপূর্ণ বিজ্ঞাপনের জন্য শুধুমাত্র সরকারের ভূমিকাই যে প্রশ্নের মুখে পড়েছে তা নয়, বারবার বিভ্রান্ত হয়েছেন পরীক্ষার্থীরাও। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্রাথমিকে নিয়োগ নিয়ে নতুন করে অস্বস্তির মুখে রাজ্য সরকার। Update: January 25, 2013 10:16 IST

http://zeenews.india.com/bengali/nation/supreme-court-on-primary-teachers-recruitment_10943.html

 


 

 

পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে আদালতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। সোম অথবা মঙ্গলবার আদালতে মামলা দায়ের করতে চলেছে কমিশন। সোমবারই রাজ্যের চিঠির জবাব দেবে কমিশন। এর আগে তৃণমূলের তরফ থেকে মুকুল রায়ের প্রচ্ছন্ন হুমকির পরেও আজ বিজ্ঞপ্তি জারি করেনি কমিশন। ফলে ২৬, ৩০ এপ্রিল ভোটের সম্ভাবনা কার্যত নেই। নির্বাচন অমিশনের নিয়ম অনুয়ায়ী ভোটের ২৮ থেকে ৩৫ দিন আগে বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হয় কমিশনকে। নিয়ম মেনে ২৬ তারিখ ভোট করতে হলে আজই বিজ্ঞপ্তি জারির শেষ দিন ছিল। ফলে আজ কমিশন বিজ্ঞপ্তি জারি না করায় রাজ্য সরকারের ঘোষিত নির্ঘণ্ট মেনে ভোট করা কার্যত অসম্ভব।   দুপুরের অবস্থান থেকে সরে এল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে আদালতের দড়জায় যাওয়ার রাস্তাই খোলা রাখছেন মীরা পাণ্ডেরা। কমিশন রাজ্য সরকারের সংঘাতে আজ `ঘি` ঢালেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়। মহাকরণের চার দেওয়ালে `প্রোটোকল` মেনে যে কথা বলা সম্ভব হচ্ছিল না। মুকুল রায়ের সাংবাদিক বৈঠকে সে কথাই বলল তৃণমূল কংগ্রেস। 

ভোট বানচাল করে দিতে রাজ্য নির্বাচন কমিশন ষড়যন্ত্র চালচ্ছে বলে অভিযোগ করলেন মুকুল রায়। তিনি বলেন, "ভোট পিছিয়ে দেওয়ার জন্য ষড়যন্ত্র করছে কমিশন। বিরোধীদের হার রুখতে চলছে ষড়যন্ত্র।"

তিনি আরও বলেন, রাজ্য সরকার চেয়েছিল ফেব্রুয়ারিতে পঞ্চায়েত ভোট হোক। গরমে নির্বাচন হলে দাবদাহে কোনও সরকারি কর্মীর মৃত্যু হলে দায়ী থাকবে নির্বাচন কমিশন। মুকুলের কথায়, "কমিশনকে সতর্ক করে দিচ্ছি। গরমে একজনেরও মৃত্যু হলে কমিশন দফতরের সামনে দেহ নিয়ে বিক্ষোভ হবে।"

আজ আগের অবস্থানেই অনড় থেকে পঞ্চায়েতমন্ত্রী মহাকরণে জানান, `২৬ ও ৩০ এপ্রিল ভোট হবে`। সচিবদের সঙ্গে ম্যরাথন বৈঠকের পর একথা জানান সুব্রত মুখার্জি। কমিশনকে আজই দ্বিতীয় দফায় চিঠি পাঠানোর কথা ঘোষণা করেন তিনি। সন্ধ্যের আগেই সেই চিঠি পৌঁছয় রাজ্য নির্বাচন দফতরে। চিঠিতে কমিশনের সমস্ত প্রশ্নের জবাব দেওয়া হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন সুব্রত।

 

পঞ্চায়েত নির্বাচনের জট আরও খানিকটা জটিল করে তুললেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়। ভোট বানচাল করে দিতে রাজ্য নির্বাচন কমিশন ষড়যন্ত্র চালচ্ছে বলে অভিযোগ করলেন মুকুল রায়। তিনি বলেন, "ভোট পিছিয়ে দেওয়ার জন্য ষড়যন্ত্র করছে কমিশন। বিরোধীদের হার রুখতে চলছে ষড়যন্ত্র।" 

তিনি আরও বলেন, রাজ্য সরকার চেয়েছিল ফেব্রুয়ারিতে পঞ্চায়েত ভোট হোক। গরমে নির্বাচন হলে দাবদাহে কোনও সরকারি কর্মীর মৃত্যু হলে দায়ী থাকবে নির্বাচন কমিশন। মুকুলের কথায়, "কমিশনকে সতর্ক করে দিচ্ছি। গরমে একজনেরও মৃত্যু হলে কমিশন দফতরের সামনে দেহ নিয়ে বিক্ষোভ হবে।" 

আজ আগের অবস্থানেই অনড় থেকে পঞ্চায়েতমন্ত্রী মহাকরণে জানান, `২৬ ও ৩০ এপ্রিল ভোট হবে`। সচিবদের সঙ্গে ম্যরাথন বৈঠকের পর একথা জানান সুব্রত মুখার্জি। কমিশনকে আজই দ্বিতীয় দফায় চিঠি পাঠানোর কথা ঘোষণা করেন তিনি। সন্ধ্যের আগেই সেই চিঠি পৌঁছয় রাজ্য নির্বাচন দফতরে। চিঠিতে কমিশনের সমস্ত প্রশ্ন জবাব দেওয়া হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন সুব্রত।

 

 

কলকাতা: দিদির রাজত্বে দিদিগিরি!
দাদার রাজত্বের অবসান ঘটিয়ে বাংলায় ক্ষমতায় এসেছেন দিদি৷ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলেন, দলের অন্দরে দিদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাপট অসীম৷ কিন্তু দিদির রাজ্যপাটেও চলছে দিদিগিরি৷ সৌজন্যে রাজ্যের তিন দাপুটে সরকারি অফিসার৷ তাঁদের সামলাতে মমতার রীতিমতো হিমসিম অবস্থা হয়েছে বলে অভিমত ওয়াকিবহাল মহলের মমতার কর্তৃত্বকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দেওয়া ওই তিন মহিলা কারা? একজন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার মীরা পাণ্ডে৷ দ্বিতীয়জন আইপিএস অফিসার দময়ন্তী সেন, তৃতীয়জন আইএএস অফিসার নন্দিনী চক্রবর্তী৷

১৯৭৪ সালের আইএএস ব্যাচের অফিসার মীরা পাণ্ডে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে এম.এ করেছেন৷ লন্ডন স্কুল অফ ইকনমিক্স থেকে সোস্যাল প্ল্যানিং-এ এমএসসি করেছেন৷ শেক্সপিয়ার এবং ডিকেন্স-এর অনুরাগী দাপুটে মীরাদেবী চিরদিনই আইন মেনে মাথা উঁচু করে কাজ করেছেন৷ তাই আইএএস মহলে জনপ্রিয় হলেও কখনওই রাজনীতিকদের কাছের লোক হয়ে ওঠেননি৷ আইন মেনে দায়িত্ব পালনের অনমনীয় মনোভাবের জেরে বাম আমলেও একাধিকবার সরকারের সঙ্গে সংঘাতের পথে হাঁটতে হয়েছে তাঁকে৷
এবার পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে শাসকদলের সঙ্গে মুখোমুখি এই অকুতোভয় আমলা৷ 

১৯৯৬-এর ব্যাচের আইপিএস অফিসার দময়ন্তী সেনই কলকাতা পুলিশের প্রথম মহিলা গোয়েন্দা প্রধান৷ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির এই কৃতী ছাত্রী রবীন্দ্রসঙ্গীতের অনুরাগী৷ নিজে গান গাইতেও পারেন৷ পরিচিতরা বলেন, কলকাতায় থাকলে কখনও জিমে যেতে ভোলেন না এই দুঁদে পুলিশ অফিসার৷ শিরদাঁড়া সোজা করে কর্তব্যপালন করতে গিয়ে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখোমুখি দাঁড়াতে হয় তাঁকে৷ তদন্ত শেষের আগেই পার্কস্ট্রিটকাণ্ডকে সাজানো ঘটনা অ্যাখ্যা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তত্কালীয় যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) দময়ন্তীদেবী তদন্ত করে প্রমাণ করে দেন, ধর্ষণের অভিযোগ সত্যি৷ পরবর্তীকালে তাঁকে বদলি করা হলেও তাঁর মধ্যে সিংহ বিক্রম দেখেছিল রাজ্যবাসী৷ 
লেডি ব্রোবোর্ন কলেজ এবং জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী ছাত্রী নন্দিনী চক্রবর্তী ১৯৯৪-এর ব্যাচের আইএএস অফিসার৷ ওয়াকিবহাল মহলের মতে, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রিয় পাত্রী নন্দিনীদেবী প্রথম দিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও ঘনিষ্ঠ ছিলেন৷ তৃণমূল সরকারের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দফতরের সচিব পদেও ছিলেন তিনি৷ কিন্তু তার পরেই পরিস্থিতি অন্যদিকে গড়ায়৷ রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, সরকারের উত্সব এবং মেলার ব্যয়-বাহুল্য নিয়ে প্রশ্ন তোলায় মুখ্যমন্ত্রীর রোষের মুখে পড়তে হয় তাঁকে৷ সূত্রের খবর, কিছু নির্দিষ্ট সংবাদপত্রে সরকারি বিজ্ঞাপন দেওয়া নিয়ে আপত্তি তোলাতেও তাঁর উপর বেজার খাপ্পা হন মমতা৷ ফলস্বরূপ বারবার বদলি৷ অবশেষে কম গুরুত্বপূর্ণ জেলা গেজেটার পদে বদলি৷ 
দময়ন্তী ও নন্দিনী-অস্বস্তি কাটাতে না হয় বদলিকে হাতিয়ার করেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এবার মীরার মোকাবিলা কী দিয়ে করবেন, সেই প্রশ্নই উঠছে৷ 

http://www.abpananda.newsbullet.in/state/34-more/35156-2013-03-30-13-46-34


ফের প্রশ্নের মুখে পড়ল শিল্প নিয়ে রাজ্য সরকারের দুই নীতি৷ শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী পার্থ চ‌ট্টোপাধ্যায়ের সামনেই শিল্পের ব্যাপারে সরকারের জমি নীতি এবং বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বা সেজ নীতি নিয়ে সরব হলেন শিল্পপতিরা৷ জবাবে পার্থবাবু অবশ্য ফের দাবি করেছেন, রাজ্যে শিল্প গড়ার ক্ষেত্রে জমি কোনও সমস্যা নয়৷ শিল্পকর্তাদের উদ্দেশে বরং তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, 'কেন আপনারা সরকারকে বন্দুক, বুলেট ব্যবহার করে জমি নিতে বলছেন?' তবে 'আদর্শগত অবস্থানের' জন্য সরকার রাজ্যে সেজ গড়ার বিরোধী বলে তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন৷ 

শনিবার বণিকসভা সিআইআই-এর বার্ষিক পূর্বাঞ্চলীয় সভায় পার্থবাবু ছাড়াও হাজির ছিলেন সিআইআই সভাপতি আদি গোদরেজ, পরবর্তী সভাপতি হিসাবে যাঁর নাম ঘোষণা করা হয়েছে সেই এস গোপালাকৃষ্ণাণ সহ বহু বিশিষ্ট শিল্পকর্তা৷ বৈঠক শুরুর আগে ঘরোয়া আলোচনায় পার্থবাবুকে শিল্পকর্তারা রাজ্যে শিল্প গড়ার ব্যাপারে জমি পাওয়ার সমস্যার কথা উল্লেখ করেন৷ সেজ নিয়ে সরকারের বিরোধিতার কারণ কী, সে ব্যাপারেও পার্থবাবুর কাছে জানতে চান তাঁরা৷ পার্থবাবু নিজেই শিল্পপতিদের এই বক্তব্যের কথা জানান৷ শিল্পকর্তাদের সংশয় কাটাতে সভায় তিনি বলেন, 'এখানে উপস্থিত অনেক বক্তাই আমাকে বলেছেন জমি নিয়ে কিছু করতে৷ কিন্ত্ত, আমি আপনাদের বলছি শিল্পের জন্য রাজ্যে জমি কোনও সমস্যা নয়৷ আপনাদের কাছে বিনিয়োগ প্রস্তাব থাকলে, আমাকে দিন৷ জমি কোনও সমস্যা হবে না৷ কেউ জমি চাইছে না, অথচ সবাই সমালোচনা করছে৷ আমরা ইতিমধ্যেই আটটি প্রকল্পের ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বসীমা অতিরিক্ত জমি রাখার অনুমতি দিয়েছি৷ আরও ১১টি আবেদন সরকারের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে৷ জমির কতটা নির্মাণকাজে ব্যবহার করা যাবে সে ব্যাপারে বর্তমানে যে অনুপাত (ফ্লোর এরিয়া রেসিও) রয়েছে, তাও আমরা বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করছি৷' রাজ্য সরকারের সেজ বিরোধিতার কারণেই রাজারহাটে ইনফোসিসের প্রস্তাবিত বিনিয়োগ থমকে রয়েছে৷ রাজ্যে শিল্প স্থাপনের ক্ষেত্রে এই বিরোধিতা কতটা যুক্তিসঙ্গত তা নিয়েও এ দিন বিতর্ক উস্কে দিয়েছেন ইনফোসিসের কো-চেয়ারম্যান গোপালাকৃষ্ণাণ৷ এ ব্যাপারে এক নির্দিষ্ট প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, 'প্রত্যেক সরকার এবং রাজনৈতিক দলের নিজস্ব চিন্তাভাবনা থাকে৷ এটাই গণতন্ত্র৷ আমরা সেই ভাবনাকে সম্মান করি৷ কিন্ত্ত, পাশাপাশি আমরা এটাও চাই যে তারা শিল্পে উত্সাহ দিক৷ আমি শুধু ইনফোসিস নিয়ে বলছি না, সামগ্রিক শিল্প নিয়ে বলছি৷' 

রাজারহাটে একটি সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট কেন্দ্র গড়ার জন্য ইনফোসিস ইতিমধ্যেই প্রথম পর্যায়ে এক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব রেখেছে৷ এই কেন্দ্রটি গড়ার জন্য নিউটাউনে হিডকোর তরফ থেকে ৫০ একর জমিও তাদের দেওয়া হয়েছে৷ জমির দাম বাবদ ৭৫ কোটি টাকা সংস্থার তরফে হিডকোকে দিয়েও দেওয়া হয়েছে৷ কিন্ত্ত, ইনফোসিসের প্রস্তাবিত কেন্দ্রটিকে রাজ্য সরকার কিছুতেই সেজের তকমা দিতে রাজি নয়৷ ফলে প্রায় দু'বছর আগে জমি হাতে পেলেও, সংস্থার তরফে সেখানে নির্মাণকাজ শুরু করা হয়নি৷ সেজের পরিবর্তে ইনফোসিসের প্রস্তাবিত কেন্দ্রটি যাতে এসটিপিআই (সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক অফ ইন্ডিয়া) -এর সুবিধা পায় তার আর্জি জানিয়ে রাজ্য সরকারের তরফে কেন্দ্রকে লেখাও হয়েছে৷ যদিও তার উত্তর এখনও আসেনি৷ 

তবে সেজের তকমা পাওয়ার দাবির ব্যাপারে ইনফোসিস যে এখনও অনড় তার ইঙ্গিত দিয়েছেন গোপালাকৃষ্ণাণ৷ তিনি বলেন, 'সেজে ম্যাট (মিনিমাম অলটারনেট ট্যাক্স)-এর সুবিধা এখন থেকে আর পাওয়া যাবে না৷ কিন্ত্ত, তা সত্ত্বেও সেজে ১৫ বছরের জন্য শিল্প সংস্থার বহু সুযোগ-সুবিধা এখনও বহাল রাখা রয়েছে৷ শিল্প সংস্থাকে এই সুবিধা দেওয়ার জন্যই পৃথিবীর অনেক দেশের মতো ভারতেও সেজ নীতি গ্রহণ করা হয়েছে৷' তাহলে কি এ রাজ্যে ইনফোসিসের প্রস্তাবিত প্রকল্পটি দিনের আলো দেখবে না? গোপালাকৃষ্ণাণের জবাব, 'মন্ত্রীর সঙ্গে আমার আজ কথা হয়েছে৷ আমি ফের আসব তাঁর সঙ্গে এ ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা করতে৷ আমরা এ রাজ্যে বিনিয়োগ করতে খুবই উত্সাহী এবং এই প্রকল্পের ভবিষ্যত্‍ নিয়ে আশাবাদী৷ তবে খুব আশাবাদী নই৷ দেখা যাক সরকার আমাদের কী বিকল্প প্রস্তাব দেয়৷ তার পরই আমরা সিদ্ধান্ত নেব৷' রাজ্যে ইতিমধ্যেই একাধিক তথ্য প্রযুক্তি সংস্থা সেজের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে কাজ করছে৷ সেজের তকমা না পেলেও প্রতিযোগী সংস্থাগুলি রাজ্যে যে সমস্ত সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে, বিকল্প উপায়ে সেই সমস্ত সুযোগ-সুবিধা ইনফোসিসও চায় বলে গোপালাকৃষ্ণাণ এ দিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন৷ 

ইনফোসিসের ব্যাপারে সরকারের আগ্রহের কথা ফের জানিয়েছেন পার্থবাবু৷ তিনি বলেন, 'ওরা বাণিজ্যিক সুবিধার কারণে সেজ চেয়েছিল৷ কিন্ত্ত, আদর্শগত কারণে আমরা তা দিতে পারছি না৷ তবে সেজ ছাড়া বাকি সমস্ত সুবিধা কীভাবে দেওয়া যায় দেখব৷ গোপালাকৃষ্ণাণের সঙ্গে আজ কথা বলেছি৷ ফের কথা বলব৷ ওদের প্রতিনিধিরা আসবে আলোচনা করতে৷ কীভাবে বিকল্প উপায়ে ইনফোসিসের প্রকল্প বাস্তবায়িত হওয়া সম্ভব, তা নিয়ে কথা হবে৷ আমরা চাই ইনফোসিস এখানে কাজ করুক৷' 


 

মধুচক্রের রমরমা বারাসত অঞ্চলে

অতনু দাস 

বারাসত ও আশপাশের এলাকায় রমরমিয়ে চলছে মধুচক্রের ব্যবসা৷ অভিযোগ, জেলা পুলিশ এই চক্র বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারছে না৷ প্লেসমেন্ট এজেন্সির মতো মধুচক্রও হয়ে উঠছে নারী পাচারের মাধ্যম৷ চটজলদি টাকার নেশায় মাতছে মধ্যবিত্ত ঘরের তরুণীরাও৷ স্কুল-কলেজের পড়ুয়া থেকে গৃহবধূ পর্যন্ত সকলকেই টানছে বিভিন্ন মধুচক্রের মক্ষিরানিরা৷ 

১৫ মার্চ মধ্যমগ্রাম থেকে গোয়েন্দারা এক মক্ষিরানিকে ধরার পর নড়ে চড়ে বসেছে জেলা পুলিশ৷ মধ্যমগ্রামের বিধানপল্লি থেকে অঞ্জলি বিশ্বাস নামে এক গৃহবধূকে ধরে গোয়েন্দা পুলিশ৷ মহিলার স্বামী আশিস বিশ্বাসের অভিযোগ, তাঁর অনুপস্থিতিতে বাড়িতে স্ত্রী মধুচক্র চালান৷ এমনকি মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর অঞ্জলিদেবী নিজের মেয়েকে দেহব্যবসায় নামানোরও উদ্যোগ নেন৷ কোনও মতে বাড়ি থেকে পালিয়ে মেয়েটি এক প্রতিবেশীকে বিষয়টি জানায়৷ ৯ মার্চ গোয়েন্দা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন মেয়েটির বাবা৷ মেয়ের মুখ থেকে পুলিশ মায়ের গুণপনা জানে৷ পরদিনই বারাসতের বিভিন্ন জায়গায় মধুচক্রের খোঁজে তল্লাশি চলে৷ ন'পাড়ার প্রতাপাদিত্য রোডে সুদীন্ত সরকারের বাড়ি থেকে পুলিশ তিন জোড়া কপোত-কপোতীকে অসংলগ্ন পোশাকে গ্রে
start_blog_img