How Would Mamata Create One Crore Job? For Whom Reservation Declared?
Sign in

How would Mamata create one crore job? For whom reservation declared?

এক কোটি চাকরির আশ্বাসন সত্বেও জমি জট ছাড়িয়ে শিল্পের কোনও দিশা দিতে অক্ষম মুখ্যমন্ত্রী।  চাকরিই যদি না হয়, তাহলে কিসের সংরক্ষণ? বেকার ভাতায় এক লক্ষ যুবক যুবতী উপকৃত হবেন, তাঁরাই বা কারা?

পলাশ বিশ্বাস

এক কোটি চাকরির আশ্বাসন সত্বেও জমি জট ছাড়িয়ে শিল্পের কোনও দিশা দিতে অক্ষম মুখ্যমন্ত্রী।  চাকরিই যদি না হয়, তাহলে কিসের সংরক্ষণ? বেকার ভাতায় এক লক্ষ যুবক যুবতী উপকৃত হবেন, তাঁরাই বা কারা?

বিল তৈরি করেছিল বামফ্রন্ট সরকারই। এবার রাজ্যের উচ্চ শিক্ষায় সংরক্ষণের সুযোগ বাড়াতে সেই বিলকেই বিধানসভায় পেশ করতে চলেছে রাজ্য সরকার। 

বুধবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের উচ্চ শিক্ষায় সংরক্ষণের জন্য বাজেট অধিবেশনে নতুন বিল আনার কথা ঘোষণা করেছেন। মমতা ব্যানার্জি জানিয়েছেন, ''উচ্চ শিক্ষায় এস সি-দের জন্য ২২শতাংশ, এস টি দের ৬শতাংশ এবং ও বি সি-দের জন্য ১৭শতাংশ সংরক্ষণ করা হবে। এটা বৈপ্লবিক সিদ্ধান্ত।'' 

কিন্তু এরাজ্যে বামফ্রন্ট সরকারের সময়েই উচ্চ শিক্ষায় তফসিলী জাতির জন্য ২২শতাংশ ও আদিবাসীদের জন্য ৬শতাংশ সংরক্ষণের ব্যবস্থা বহাল ছিল। ও বি সি-দের জন্য সংরক্ষণের উদ্যোগও নেয় বামফ্রন্ট সরকার। এই প্রসঙ্গে রাজ্যের প্রাক্তন উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী সুদর্শন রায়চৌধুরীকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, ''উচ্চ শিক্ষায় ও বি সি-দের সংরক্ষণের জন্য রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দপ্তর একটি বিলের খসড়া তৈরি করে। সেই খসড়া পাঠানো হয়েছিলো অনগ্রসর শ্রেণী কল্যাণ দপ্তরের কাছে। ২০১১সালের বিধানসভা নির্বাচনের দিন ঘোষণা হয়ে যাওয়ার জন্য আর তৈরি করা সম্ভব হয়নি।''

বামফ্রন্ট সরকারের সেই খসড়া বিলে উচ্চ শিক্ষায় ও বি সি-দের জন্য সংরক্ষণের ফলে অন্যান্য অংশের (জেনারেল ক্যাটাগরি) ছাত্রছাত্রীদের যাতে আসন সংখ্যা কমে না যায় তারও ব্যবস্থা করা ছিলো। ২০১০সালের ২৩শে ডিসেম্বর এই বিষয় নিয়ে রাজ্য বিধানসভায় একটিও বিবৃতিও দিয়েছিলেন সুদর্শন রায়চৌধুরী। সেই বিবৃতিতে তৎকালীন উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছিলেন, রাজ্য সরকারের পরিচালিত এবং পে প্যাকেট প্রাপ্ত বেসরকারী কলেজগুলিতে স্নাতকস্তরে ভর্তির ক্ষেত্রে ও বি সি-দের জন্য মোট ১৭ শতাংশ হারে সংরক্ষণ চালু করা হবে। আগামী শিক্ষাবর্ষ অর্থাৎ ২০১১-১২ সাল থেকে ভর্তির ক্ষেত্রে এই হার করা হবে ১০ শতাংশ। এর মধ্যে ওবিসি 'এ' ক্যাটাগরি ভুক্তদের জন্য ৫ শতাংশ এবং ও বি সি 'বি' ক্যাটাগরিভুক্তদের জন্য ৫শতাংশ সংরক্ষণ চালু হবে। পরবর্তী শিক্ষাবর্ষে অর্থাৎ ২০১২-১৩ সাল থেকে ভর্তির ক্ষেত্রে সংরক্ষণের হার বাড়বে আরো ৭ শতাংশ। এরমধ্যে ও বি সি 'এ'–র জন্য ৫শতাংশ এবং ও বি সি 'বি'-র জন্য ২শতাংশ সংরক্ষিত হবে। সবমিলিয়ে ওবিসিদের জন্য মোট ১৭শতাংশ আসন সংরক্ষিত হবে। অন্যান্য অংশের ছাত্রছাত্রীদের যাতে আসন সংখ্যার কোনো হেরফের না ঘটে তারজন্য তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠিও দিয়েছিলেন। কারণ, রাজ্যের সরকারী কলেজ বা সরকারের অর্থপুষ্ট কলেজগুলিতে আসন সংখ্যা বাড়ানো নিয়ে সমস্যা না হলেও মেডিক্যাল কলেজ বা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে আসন সংখ্যা বাড়াতে হলে মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া বা এ আই সি টি ই-এর অনুমোদন প্রয়োজন। একইভাবে আইন কলেজের আসনসংখ্যা বাড়াতে বার কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার অনুমোদন লাগে। বিগত সরকারের আমলে উচ্চ শিক্ষা দপ্তর উদ্যোগ নিয়ে এসব কাজ করে রেখেছিলো। 

উচ্চ শিক্ষায় সংরক্ষণ নিয়ে বামফ্রন্ট সরকারের করে রাখা এই কাজ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি অবশ্য কোনো রা কাড়েননি। তিনি বরং তৃণমূল কংগ্রেসের সরকারের একক কৃতিত্ব দাবি করে এদিন মহাকরণে জানান,''এটা বৈপ্লবিক সিদ্ধান্ত। এই যে সিট রিজার্ভ করবো তাতে জেনারেল ক্যাটাগরির সিটে কোনো টাচ করবো না। তাকে অক্ষুণ্ণ রেখে একস্ট্রা সিট করবো। তারজন্য রাজ্য সরকার ধাপে ধাপে ৬বছরে ১হাজার কোটি টাকা খরচ করবে।'' মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পর উচ্চশিক্ষা দপ্তরের এক আধিকারিক জানান,''রাজ্যে তফসিলী জাতি ও আদিবাসীদের জন্য সংরক্ষণ আগেই ছিলো। নতুন যা হতে চলেছে তা কেবল ওবিসিদের জন্য সংরক্ষণ।'' 

বুধবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের উচ্চ শিক্ষায় সংরক্ষণের জন্য বাজেট অধিবেশনে নতুন বিল আনার কথা ঘোষণা করেছেন। মমতা ব্যানার্জি জানিয়েছেন, ''উচ্চ শিক্ষায় এস সি-দের জন্য ২২শতাংশ, এস টি দের ৬শতাংশ এবং ও বি সি-দের জন্য ১৭শতাংশ সংরক্ষণ করা হবে। এটা বৈপ্লবিক সিদ্ধান্ত।'' 

কিন্তু এরাজ্যে বামফ্রন্ট সরকারের সময়েই উচ্চ শিক্ষায় তফসিলী জাতির জন্য ২২শতাংশ ও আদিবাসীদের জন্য ৬শতাংশ সংরক্ষণের ব্যবস্থা বহাল ছিল। ও বি সি-দের জন্য সংরক্ষণের উদ্যোগও নেয় বামফ্রন্ট সরকার। এই প্রসঙ্গে রাজ্যের প্রাক্তন উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী সুদর্শন রায়চৌধুরীকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, ''উচ্চ শিক্ষায় ও বি সি-দের সংরক্ষণের জন্য রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দপ্তর একটি বিলের খসড়া তৈরি করে। সেই খসড়া পাঠানো হয়েছিলো অনগ্রসর শ্রেণী কল্যাণ দপ্তরের কাছে। ২০১১সালের বিধানসভা নির্বাচনের দিন ঘোষণা হয়ে যাওয়ার জন্য আর তৈরি করা সম্ভব হয়নি।''

বামফ্রন্ট সরকারের সেই খসড়া বিলে উচ্চ শিক্ষায় ও বি সি-দের জন্য সংরক্ষণের ফলে অন্যান্য অংশের (জেনারেল ক্যাটাগরি) ছাত্রছাত্রীদের যাতে আসন সংখ্যা কমে না যায় তারও ব্যবস্থা করা ছিলো। ২০১০সালের ২৩শে ডিসেম্বর এই বিষয় নিয়ে রাজ্য বিধানসভায় একটিও বিবৃতিও দিয়েছিলেন সুদর্শন রায়চৌধুরী। সেই বিবৃতিতে তৎকালীন উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছিলেন, রাজ্য সরকারের পরিচালিত এবং পে প্যাকেট প্রাপ্ত বেসরকারী কলেজগুলিতে স্নাতকস্তরে ভর্তির ক্ষেত্রে ও বি সি-দের জন্য মোট ১৭ শতাংশ হারে সংরক্ষণ চালু করা হবে। আগামী শিক্ষাবর্ষ অর্থাৎ ২০১১-১২ সাল থেকে ভর্তির ক্ষেত্রে এই হার করা হবে ১০ শতাংশ। এর মধ্যে ওবিসি 'এ' ক্যাটাগরি ভুক্তদের জন্য ৫ শতাংশ এবং ও বি সি 'বি' ক্যাটাগরিভুক্তদের জন্য ৫শতাংশ সংরক্ষণ চালু হবে। পরবর্তী শিক্ষাবর্ষে অর্থাৎ ২০১২-১৩ সাল থেকে ভর্তির ক্ষেত্রে সংরক্ষণের হার বাড়বে আরো ৭ শতাংশ। এরমধ্যে ও বি সি 'এ'–র জন্য ৫শতাংশ এবং ও বি সি 'বি'-র জন্য ২শতাংশ সংরক্ষিত হবে। সবমিলিয়ে ওবিসিদের জন্য মোট ১৭শতাংশ আসন সংরক্ষিত হবে। অন্যান্য অংশের ছাত্রছাত্রীদের যাতে আসন সংখ্যার কোনো হেরফের না ঘটে তারজন্য তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠিও দিয়েছিলেন। কারণ, রাজ্যের সরকারী কলেজ বা সরকারের অর্থপুষ্ট কলেজগুলিতে আসন সংখ্যা বাড়ানো নিয়ে সমস্যা না হলেও মেডিক্যাল কলেজ বা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে আসন সংখ্যা বাড়াতে হলে মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া বা এ আই সি টি ই-এর অনুমোদন প্রয়োজন। একইভাবে আইন কলেজের আসনসংখ্যা বাড়াতে বার কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার অনুমোদন লাগে। বিগত সরকারের আমলে উচ্চ শিক্ষা দপ্তর উদ্যোগ নিয়ে এসব কাজ করে রেখেছিলো। 

উচ্চ শিক্ষায় সংরক্ষণ নিয়ে বামফ্রন্ট সরকারের করে রাখা এই কাজ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি অবশ্য কোনো রা কাড়েননি। তিনি বরং তৃণমূল কংগ্রেসের সরকারের একক কৃতিত্ব দাবি করে এদিন মহাকরণে জানান,''এটা বৈপ্লবিক সিদ্ধান্ত। এই যে সিট রিজার্ভ করবো তাতে জেনারেল ক্যাটাগরির সিটে কোনো টাচ করবো না। তাকে অক্ষুণ্ণ রেখে একস্ট্রা সিট করবো। তারজন্য রাজ্য সরকার ধাপে ধাপে ৬বছরে ১হাজার কোটি টাকা খরচ করবে।'' মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পর উচ্চশিক্ষা দপ্তরের এক আধিকারিক জানান,''রাজ্যে তফসিলী জাতি ও আদিবাসীদের জন্য সংরক্ষণ আগেই ছিলো। নতুন যা হতে চলেছে তা কেবল ওবিসিদের জন্য সংরক্ষণ।'' 

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জমিনীতিতে অনড়।ওবিসির জন্য আলাদা বাজেট পেশ করার জন্য তিনি নাকি প্রস্তুত ছিলেন, মীডিয়ায় এমনিই খবর ছিল।সে গুড়ে বালি।তার বদলে তিনি উচ্চ শিক্ষায় সংরক্ষণ ঘোষণা করেছেন। নাকের বদলে নরুন।  গুলি চালিয়ে জমি অধিগ্রহণ করা হবে না। জমি নেওয়ার প্রয়োজন হলে জমির মালিকের সম্মতি নিয়েই নেওয়া হবে। জনবসতিপূর্ণ এলাকা বাদ দিয়ে জমি নিতে হবে। জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণ নিয়ে বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের প্রশ্নের জবাবে বিধানসভায় একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক কোটি চাকরির আশ্বাসন সত্বেও জমি জট ছাড়িয়ে শিল্পের কোনও দিশা দিতে অক্ষম মুখ্যমন্ত্রী।  চাকরিই যদি না হয়, তাহলে কিসের সংরক্ষণ?


তিনি আরও জানিয়েছেন ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের ব্যাপারে ইতিমধ্যেই ৪৬৫টি একর জমি জোগাড়  হয়েছে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনে প্রকল্পের নকশা বদল করা হবে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। 


উচ্চ শিক্ষায় রিজার্ভেশন ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী ?!

উচ্চ শিক্ষায় রিজার্ভেশন ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী ?!
Saradindu Biswas
1:22 PM (2 hours ago)
 
  
to me
  
শরদিন্দু উদ্দীপন 
উচ্চ শিক্ষায় রিজার্ভেশন ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী ?!   
পঞ্চায়েতে নির্বাচনের ঢাকে কাঠি পড়ে গেছে। দিনক্ষন নিয়ে একটু যা ঝামেলা। 
গত কুড়ি মাসে একের পর এক বেচাল চালে ইতিমধ্যেই তিনি অনেকটা ডিফেন্সিভ। 
তাই স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গীতে বিপক্ষকে কাবু করতে তিনি একপ্রকার মরিয়া হয়েই সংরক্ষিত ময়দানে খেলার জন্য নেমে পড়লেন।
ঘোষণা করে দিলেন উচ্চশিক্ষায় সংরক্ষণ দেবেন তার সরকার। এবং এই সংরক্ষণ অসংরক্ষিত জেনেরেলদের কোটা বাদ দিয়ে অতিরিক্ত ভাবে তৈরি করা হবে (কোথা থেকে, কিভাবে জানিনা)। 
এবং সংরক্ষণের আওতায় আসবে ২২% এসসি, ৬% এসটি ও ১৭% ওবিসি। 
অর্থাৎ সর্বমোট ৪৫% মূলনিবাসী উচ্চ শিক্ষা লাভ করতে পারবেন। 
এবং এটি একটি বৈপ্লবিক ঘোষণা বলে তিনি দাবী করেছেন বারবার। 
এখন কথা হল, তার এই সংখ্যাতত্ত্বের বাস্তবতা বা যৌক্তিকতা কতটুকু!
যে ক্যাটেগোরিগুলির জন্য তিনি যতটা সংরক্ষণের কথা ঘোষণা করেছেন তা কি জনবিন্যাস বা সেন্সাসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ(যদিও সেন্সাসে জনবিন্যাসের প্রকৃত তথ্য নেই)?
সেন্সাস, ২০০১ অনুশারে পশ্চিমবঙ্গে জনবিন্যাস নিম্নরূপঃ 
এসসি - মোট জনসংখ্যার- ২৩% (১৯৯১ সালে ছিল ২৩.৬২%)  
এসটি- মোট জনসংখ্যার- ৫.৫%
ওবিসি- মোট জনসংখ্যার- ৬০ % 
(বর্তমান সরকার ওবিসি হিসেবে ১৪৪টি জাতির নাম প্রকাশ করেছেন। মণ্ডল কমিশনের রিপোর্টে এই জাতি সংখ্যা ছিল ১৭৭টি)  এর বেশী।            
ব্রাহ্মণ - মোট জনসংখ্যার- ২ %
কায়স্থ/বদ্দি -মোট জনসংখ্যার- ৩%
অন্যান্য- মোট জনসংখ্যার- ৬.৫%   
বর্তমান সরকারের ঘোষণা অনুশারে এসসিদের সংখ্যা থেকে এই সংরক্ষণ ১% কম,এসটিদের .৫% বেশী এবং ওবিসিদের ৪৩% কম।  
অর্থাৎ ঢাক পিটিয়ে এই বৈপ্লবিক ঘোষণায় বঞ্চিত হয়ে গেল ৪৩.৫% মূলনিবাসী ভাগীদার। 
অন্য দিকে মাত্র ৫% জেনেরেল ক্যাটেগোরির জন্য খুলে রাখা হল ৫৫% আসন।
কি বলবেন একে! বৈপ্লবিক না গতানুগতিক। না, একি ভাবে পূর্বপরুষ মনুবাদীদের পদাঙ্ক অনুশরণ করে চালিয়াতি করলেন তিনি? 

এই সময়: এমএ, বিএ, ডাক্তারি, ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে ম্যানেজমেন্ট- উচ্চ শিক্ষার যাবতীয় কোর্সে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির (ওবিসি) জন্য ১৭ শতাংশ আসন সংরক্ষণ করার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার৷ এই সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে বিধানসভার আসন্ন বাজেট অধিবেশনেই একটি বিল পেশ করতে চলেছে রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দপ্তর৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার মহাকরণে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সরকারের এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে জানান, 'আগামী শিক্ষাবর্ষেই (জুন-জুলাইয়ে শুরু) এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে সরকার৷' উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে পাশে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন আরও ঘোষণা করেন, ওবিসি'দের সংরক্ষণের এই সুবিধা দিলেও সাধারণ ক্যাটিগরির জন্য বরাদ্দ আসনে ভাগ বসানো হবে না৷ তাদের রক্ষাকবচ হিসাবে সমস্ত কোর্সেই আসন সংখ্যা বাড়ানো হবে৷ এ জন্য পরিকাঠামো গড়তে আগামী অর্থবর্ষে ১ হাজার কোটি টাকা এবং পরের ৬ বছর প্রতি বছরে ৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হবে৷ 

ওয়াকিবহাল মহলের মতে, নিতান্তই প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত হলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের ২২ মাসের শাসনে এর থেকে বড় রাজনৈতিক পদক্ষেপ আর একটিও নেই৷ আসন্ন পঞ্চায়েত ভোট তো বটেই, এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা গেলে ভবিষ্যত্‍ সব নির্বাচনের জন্যই তৃণমূলের যাত্রাপথ অনেকটাই মসৃণ হয়ে যাবে৷ এমনকী, পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক ও সামাজিক সমীকরণ বদলে যাওয়াও অসম্ভব নয়৷ পশ্চিমবঙ্গে এ পর্যন্ত ১৪৪টি আর্থিক ভাবে অনগ্রসর শ্রেণি ওবিসি তালিকাভুক্ত হয়েছে৷ এর মধ্যে অতি অনগ্রসর ৬৬টি শ্রেণির সব ক'টিই সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের৷ ১৭ শতাংশ সংরক্ষণের ১০ শতাংশই এই অংশের জন্য বরাদ্দ৷ বাকি ৭৮টি শ্রেণির মধ্যেও ২০টি শ্রেণি মুসলিম৷ এই অংশের জন্য বরাদ্দ বাকি ৭ শতাংশ৷ আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে এ রাজ্যে প্রথম বার ওবিসি'দের জন্য আসন সংরক্ষণ হতে চলেছে৷ এ জন্য গত বছর রাজ্যের পঞ্চায়েত দন্তর পঞ্চায়েত এলাকায় ওবিসি সুমারি করে৷ তাতে জানা গিয়েছে, গ্রাম বাংলার ২৪ শতাংশ বা আড়াই কোটি মানুষ এই শ্রেণিভুক্ত, যার সিংহভাগই মুসলিম৷ ফলে এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষিত সিদ্ধান্তের সুবাদে এই প্রথম গরিব মুসলিমরা এ রাজ্যে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার-সহ উচ্চ শিক্ষার যাবতীয় কোর্সে সংরক্ষণের সুবিধা পাবে৷ একই সুবিধা পাবে অন্যান্য ধর্মের পিছিয়ে থাকা অংশ৷ পঞ্চায়েত ভোটের আগে যা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাস্টার স্ট্রোক হিসাবেই দেখছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা৷ সিপিএম তো বটেই, একদা জোটসঙ্গী কংগ্রেসের দুর্গ মালদহ, মুর্শিদাবাদেও সংরক্ষণের এই সিদ্ধান্ত ভোটের ময়দানে বড় হাতিয়ার হতে পারে তৃণমূলের৷ ২০০৮-এর পঞ্চায়েত ভোটে বিপর্যয়ের আঁচ পেয়ে বামফ্রন্ট সরকার ওবিসি ভোটকে হাতিয়ার করতে সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণের মাত্রা ৭ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করেছিল৷ কিন্ত্ত সিপিএমের মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য উচ্চ শিক্ষায় ওবিসি সংরক্ষণ চালু করার ঘোর বিরোধী ছিলেন৷ তাঁর সময়ে অনগ্রসর কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী উপেন কিস্কু তিন বার মন্ত্রিসভায় প্রস্তাব পেশ করলেও বুদ্ধদেববাবুর আপত্তিতে তা খারিজ হয়ে যায়৷ আরও আগে, বামফ্রন্ট সরকারের জন্মলগ্নে ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে কেন্দ্রের গঠিত কমিটির (বিন্দেশ্বরী প্রসাদ কমিটি) কাছে দাবি করা হয়েছিল, এ রাজ্যে ওবিসি বলে কিছু নেই৷ 
পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে এত কাল অনুপস্থিত ধর্ম এবং জাতের এই মিশেলকে অবশ্য শিক্ষাঙ্গনের সকলেই বাঁকা চোখে দেখতে নারাজ৷ যেমন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের মতে, 'পিছিয়ে থাকা অংশের মানুষের সামাজিক ক্ষমতায়নের এর চেয়ে বড় দৃষ্টান্ত কমই আছে৷' তিনি আরও বলেন, অনেক রাজ্য আগেই এই সুবিধা দিয়েছে৷ সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় সরকার বছর দুয়েক আগে কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে ওবিসি'দের জন্য ৩০ শতাংশ আসন সংরক্ষণ করতে আসন বৃদ্ধির একই পদ্ধতি অনুসরণ করেছিল৷ 

সরকারি চাকরিতে ওবিসি'দের জন্য ১৭ শতাংশ সংরক্ষণ আগের সরকারই চালু করে গিয়েছে৷ যদিও বিগত কয়েক বছর যাবত্ সরকারি দপ্তরে নিয়োগ কার্যত বন্ধ৷ তবে চাকরিতে সংরক্ষণ কার্যকর করার চেয়ে শিক্ষায় তা বলবত্ করা অনেক কঠিন৷ উচ্চ শিক্ষায় সংরক্ষণ চালু করতে প্রায় ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত আসন বৃদ্ধি প্রয়োজন বলে ব্রাত্যবাবু জানিয়েছেন৷ এর কারণ ব্যাখ্যা করে অনুন্নত শ্রেণি কল্যাণ দপ্তরের এক পদস্থ অফিসার বলেন, সাধারণ ক্যাটিগরির ছাত্রছাত্রীদের জন্য বরাদ্দ আসন অক্ষুণ্ণ রাখলেই শুধু হবে না, বর্ধিত আসনেরও তফসিলি এবং তফসিলি উপজাতি ভুক্তদের জন্য সাংবিধানিক বিধান মেনে যথাক্রমে ২২ ও ৬ শতাংশ আসন সংরক্ষণ করতে হবে৷ স্বভাবতই শুধু ১৭ শতাংশ আসন বাড়িয়ে ওবিসি সংরক্ষণ কার্যকর করা সম্ভব নয়৷ 

রাজ্যে উচ্চ শিক্ষার বিভিন্ন কোর্সে এখন ৬ লাখ ১০ হাজার আসন আছে৷ সংরক্ষণের সুবিধা দিতে তা ৪৫ শতাংশ বাড়িয়ে আরও ২ লাখ ৭৫ হাজার নতুন আসন সৃষ্টি করতে হবে৷ আর তার জন্য কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘরবাড়ি-সহ নানা পরিকাঠামো বৃদ্ধি এবং শিক্ষক নিয়োগ প্রয়োজন৷ স্বভাবতই এর সঙ্গে বিপুল আর্থিক দায় জড়িয়ে৷ বিরোধীদের একাংশ এই সিদ্ধান্তকে একান্তে সরকারি কোষাগারের বিনিময়ে তৃণমূলের ভোট কেনার চেষ্টা বললেও প্রকাশ্যে মুখ খোলেনি ভোট রাজনীতির কথা ভেবেই৷ আর্থিক বোঝার বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীও এড়িয়ে যাননি৷ তিনি বলেন, 'আগামী আর্থিক বছরে এ জন্য এক হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ থাকবে৷ পরের ৬ বছর ৬০০ কোটি টাকা করে বরাদ্দ রাখা হবে পরিকাঠামো গড়তে৷' মহাকরণ সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় সরকারের শতাধিক প্রকল্প আছে যা থেকে শিক্ষার প্রসার-সহ সামাজিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে রাজ্যগুলিকে অর্থ সাহায্য দেওয়া হয়৷ দিল্লির এই ধরনের কোন প্রকল্প থেকে কত টাকা পাওয়া যেতে পারে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ 

 ভারতের তিনটি রাজ্যে শিক্ষাক্ষেত্রে নিম্ন-বর্ণের হিন্দুদের কোটা সংরক্ষণ বিষয়ক একটি সিনেমা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বলিউডের প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক প্রকাশ ঝা নির্মিত সিনেমা অরক্ষণ-এ অমিতাভ বচ্চন অভিনয় করেছেন এবং আজ সিনেমাটি ভারতব্যাপী মুক্তি পেয়েছে। তবে, উত্তর প্রদেশ, পাঞ্জাব ও অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় সিনেমাটি নিষিদ্ধ করেছে। 
সমালোচকরা বলছেন, সিনেমাটিতে নিম্নবর্ণের হিন্দুদের তুলে ধরতে গিয়ে আপত্তিকর পরিভাষা ব্যবহার করা হয়েছে। তবে সমাজের বিতর্কিত বিষয় নিয়ে সিনেমা তৈরির জন্য বিখ্যাত পরিচালক প্রকাশ ঝা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। উত্তর প্রদেশ সরকার সিনেমাটির ওপর দু`মাসের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। অন্যদিকে পাঞ্জাব কর্তৃপক্ষ বলেছে, রাজ্য সরকারের গঠিত একটি প্যানেল সিনেমাটি দেখার পর এটি মুক্তি দেয়া হবে কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। 
অরক্ষণ সিনেমাটি আজ মুক্তি পেলেও এর বিজ্ঞাপন প্রচার ও পোস্টার বিলি করা হচ্ছিল কয়েক সপ্তাহ আগে থেকে। বিক্ষোভকারীরা ভারতের বিভিন্ন স্থানে ছবিটির পোস্টার ছিড়ে ফেলে। তাদের অভিযোগ সিনেমাটিতে নিম্ন-বর্ণের দলিত হিন্দু বা অচ্ছুৎদের সম্পর্কে অবমাননাকর কথাবার্তা রয়েছে। কোন কোন দলিত গ্রুপ মুসলিম জমিদার পরিবারের সন্তান- অভিনেতা সাইফ আলী খানকে নিম্ন-বর্ণের হিন্দু`র চরিত্রে অভিনয়ের ব্যাপারে আপত্তি তুলেছে। 
কী রয়েছে ছবিটিতে
ভারতের তিন প্রদেশ অরক্ষণ`কে নিষিদ্ধ করলেও ভারতের সেন্সর বোর্ড এটি মুক্তির অনুমতি দিয়েছে এবং এর অভিনেতা-অভিনেত্রীরা বলছেন, সিনেমাটিতে আপত্তিকর কোন বিষয় নেই। অমিতাভ বচ্চন সিনেমাটি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তের ব্যাপারে প্রশ্ন তুলেছেন তার ব্যক্তিগত ব্লগে। পরিচালক প্রকাশ ঝা গত সপ্তাহে তার এ ছবি সম্পর্কে বলেছেন, ভারতে এই কোটা ব্যবস্থায় কিছু লোক সুবিধা পাচ্ছে, আবার কিছু লোক সুবিধা পাওয়ার অধিকার থাকা সত্ত্বেও তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তিনি তার এ ছবিতে এ চরম বাস্তবতা তুলে ধরেছেন বলে জানান। মিস্টার ঝা বলেন, পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যেন, ভারত ভারতের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। অরক্ষণ ছবিতে এই দুই পক্ষের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরির চেষ্টা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। 
ভারতের কোটা ব্যবস্থায় কলেজ ও সরকারী চাকুরিতে সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য বিশেষ সুবিধা রাখা হয়েছে। এ পদ্ধতির সমর্থকরা বলছেন, সমাজের যে শ্রেণীর মানুষের পক্ষে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া কখনওই সম্ভব ছিল না, তাদের পক্ষে সে শিক্ষা অর্জনের সুযোগ তৈরি হয়েছে। তবে সমালোচকরা বলছেন, কোটা পদ্ধতির কারণে জাতপাত ও ধর্মের নামে ভারতীয় নাগরিকদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করা হচ্ছে। 
সর্বশেষ পাওয়া খবরে জানা গেছে, অরক্ষণ ছবির পরিচালক প্রকাশ ঝা তিনটি রাজ্যে তার সিনেমার ওপর নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি বলেছেন, ভারতের সংবিধানে বাক স্বাধীনতার যে গ্যারান্টি দেয়া হয়েছে, ওই নিষেধাজ্ঞার ফলে তা লংঘিত হয়েছে।

ভোটের পালে বেকার টানতে নয়া ভাতা

যুব উৎসাহ প্রকল্প। এ বারের রাজ্য বাজেটে বেকার ভাতা দেওয়ার নতুন প্রকল্প ঘোষণা করলেন অথর্মন্ত্রী অমিত মিত্র। ১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সি এবং অষ্টম মান পাশ করা বেকাররা রাজ্য সরকারের এমপ্লয়মেন্ট ব্যাঙ্কে নাম তোলালেই পাবেন মাসিক দেড় হাজার টাকা। তবে সকলেই নয়, রাজ্যের নথিভুক্ত এক কোটি বেকারের মধ্যে ১ লক্ষ জনকে বেছে নিয়ে এই প্রকল্প চলবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। এর ফলে সরকারের মাসে ১৫ কোটি অর্থাৎ বছরে ১৮০ কোটি টাকা খরচ হবে। যা দান-খয়রাতির তালিকায় নবতম সংযোজন।

এই বেকার ভাতা প্রাপকের সংখ্যা নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এই এক লক্ষ বেকার বাছাইয়ের মাপকাঠি কী, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। অর্থমমন্ত্রী অবশ্য কোনও ব্যাখ্যাই দেননি। আরও একটি প্রশ্ন থাকছে। তা হল, যে এক লক্ষ বেকার এই ভাতা পাবেন, ধরা যাক তাঁদের একটা অংশ চাকরি পেয়ে গেলেন। প্রশ্ন উঠছে, তখন কি ভাতা প্রাপকের সংখ্যা এক লক্ষের কম হবে? সরকারের একটি সূত্রের বক্তব্য, ভাতা প্রাপকের সংখ্যাটা এক লক্ষই থাকবে। যাঁরা চাকরি পেয়ে যাবেন, তাঁদের নাম ভাতা প্রাপকের তালিকা থেকে বাদ গিয়ে সেখানে নতুন বেকারের নাম ঢুকবে। এ ভাবেই চলবে পুরো প্রক্রিয়া। সরকারের এক কর্তার সরস মন্তব্য, "এ পুরো ওয়াটার অফ ইন্ডিয়া!"

চলতি আর্থিক বছরেই খয়রাতির একগুচ্ছ প্রকল্প চালু করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। ইমাম-মোয়াজ্জিনদের ভাতা দেওয়ার যে নতুন প্রকল্প চালু করা হয়েছে, তাতে সরকারের প্রায় ২০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। শিল্পী-গায়ক-গায়িকাদের নানাবিধ পুরস্কারে গলেছে কয়েক কোটি। বিধায়কদের সুপারিশ মেনে প্রায় ১৬০০ ক্লাবের জন্য সরকার পরিকল্পনা খাত থেকেই খরচ করেছে ৪০ কোটি টাকা। সম্প্রতি রাজ্যের সবক'টি ব্লকের অসংখ্য ক্লাবের ক্যারম বোর্ড, ক্রিকেট ব্যাট-সহ নানা ক্রীড়া সরঞ্জাম কেনার জন্য বরাদ্দ হয়েছে ১০ কোটি টাকা। এ ছাড়া উৎসব অনুষ্ঠানের লাগামছাড়া খরচ তো রয়েইছে। তারই সূত্র ধরে পঞ্চায়েত ভোটের ঠিক আগে বেকারদের জন্য খয়রাতির নতুন প্রকল্প ঘোষণা করলেন অমিত মিত্র। এতেই স্পষ্ট, সরকারের আয় বাড়লেও স্থায়ী সম্পদ তৈরির দিকে বিশেষ নজর নেই মহাকরণের।

২০১২-১৩ সালের বাজেট প্রস্তাবে সরকার ১৬ হাজার ৫৭১ কোটি টাকা মূলধন খাতে অর্থাৎ স্থায়ী সম্পদ তৈরিতে বরাদ্দ করেছিল। পরবর্তী কালে সংশোধিত ব্যয় বরাদ্দে সেই টাকার পরিমাণ কমিয়ে ১৫ হাজার ১৩৭ কোটি টাকা করা হয়। কারণ, এই খাতের খরচ কমিয়েই করা হয়েছে দান-খয়রাতি! ২০১৩-১৪ সালের বাজেটে সরকার মূলধন খাতে প্রায় ১৯ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করলেও অর্থ দফতরের কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, এ বারেও বছর শেষে বরাদ্দ কমবে।

সরকারি কর্তাদের একাংশ জানিয়েছেন, চলতি আর্থিক বছরে পরিকল্পনা খাতে ২৩ হাজার কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছিল। বাস্তবে খরচ হয়েছে মাত্র ৩৫ শতাংশ! এ বারেও বাজেটে পরিকল্পনা খাতে ২৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। কিন্তু অর্থ দফতরের কর্তারাই বলছেন, এটা আসলে লোক দেখানো বরাদ্দ। শেষ পর্যন্ত অনেক দফতরই অর্ধেক টাকাও খরচ করতে পারবে না। স্থায়ী সম্পদ তৈরির প্রশ্নে সরকারের যখন এমন মনোভাব, তখন পরিকল্পনা বহির্ভূত খাতে চলতি আর্থিক বছরে যে টাকা ধরা হয়েছিল, তার থেকে অন্তত ৪০০ কোটি টাকা বাড়তি খরচ হয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ সরকারের খরচের অভিমুখ দান-খয়রাতির দিকেই!

অর্থ দফতরের কর্তাদের অনেকেই জানিয়েছেন, এ বারও বাজেটে যে সব প্রকল্প ঘোষণা হয়েছে, তাতে পরিকল্পনা বহির্ভূত খাতে খরচ আরও বাড়বে। ফলে সরকারকে এক দিকে যেমন নিজস্ব কর আদায়ের উপর জোর দিতে হবে, তেমনই বাজার থেকে নেওয়া ঋণের উপরও ভরসা বাড়াতে হবে। সেই কারণেই বাজার থেকে ২১ হাজার ২২৯ কোটি টাকা ধার নেওয়ার কথাও এ বারের বাজেটে উল্লেখ করা হয়েছে বলে দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন। এই পুরো অর্থ বাজার থেকে তোলা হলে রাজ্যের ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে ২ লক্ষ ৪৭ হাজার কোটি টাকা।

সীমাহীন খরচের কারণেই ১১ হাজার কোটি টাকা বাড়তি রোজগারের পরেও সরকারের রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, "সে তো হবেই! মুখ্যমন্ত্রীর যা মনে হচ্ছে, খয়রাতির ঘোষণা করে দিচ্ছেন। তার পর অর্থমন্ত্রীর কাজ হচ্ছে টাকা জোটানো। ফলে রাজস্ব ঘাটতি বাড়বে, এটাই স্বাভাবিক।" অর্থনীতিবিদদের অভিযোগও একই।

আনন্দবাজার পত্রিকা



ধাঁধা
রের ভিতর ঘর, তাহার ভিতরে ঘর কেন্দ্রীয় সরকারও বুঝি এই ধাঁধাটির খোঁজ পাইয়াছে, এবং অনুপ্রাণিত হইয়া অন্য একটি ধাঁধা তৈরি করিয়াছে সংরক্ষণের ভিতর সংরক্ষণ, তাহার ভিতর সংরক্ষণ। এই ধাঁধাটির উত্তর, কেন্দ্রীয় সরকারের মতে, অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির জন্য সংরক্ষিত ২৭ শতাংশ আসনের মধ্যে ৪.৫ শতাংশ আসন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অনগ্রসর শ্রেণির মানুষদের জন্য সংরক্ষণ করা। এই ধাঁধাটিও হয়তো পূর্বোক্ত ধাঁধাটির ন্যায় কালজয়ী হইতে পারিত, কিন্তু বাদ সাধিয়াছে সুপ্রিম কোর্ট। দেশের সর্বোচ্চ আদালত জানিতে চাহিয়াছে, কীসের ভিত্তিতে এই সংরক্ষণ? কেন্দ্রীয় সরকারের নিকট কি প্রয়োজনীয় তথ্য, নথিপত্র মজুত আছে? আপাতত নথির খোঁজ চলিতেছে বটে, কিন্তু সরকারের এই সংরক্ষণেচ্ছার কারণ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মঙ্গলচিন্তা নহে, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচন, তাহাতে সংশয় নাই। বস্তুত, সকল রাজনীতিকের তূণেই ব্রহ্মাস্ত্রটির নাম সংরক্ষণ রাজনৈতিক ভাবে কোণঠাসা হইয়া পড়িলেই এই অস্ত্রটির প্রয়োগ জরুরি হইয়া পড়ে। তাহাকে সংখ্যালঘু উন্নয়নের মায়ামন্ত্রঃপূত করিতে পারিলে তো আর কথাই নাই। 
ভারতে কেন সংরক্ষণের ব্যবস্থা হইয়াছিল, কত দিনের জন্য হইয়াছিল, সবই বহুচর্চিত। স্বাধীনতা অর্জনের পরে দেশনেতারা যে ধারণাগুলিকে কেন্দ্রে রাখিয়া নূতন ভাবে দেশটিকে গড়িতে চাহিয়াছিলেন, রাজনীতির দশচক্রে সেই ধারণাগুলির সবই ধূলিসাৎ হইয়াছে। কিন্তু, সংরক্ষণের ব্যবস্থাটির ন্যায় এমন অপব্যবহার বুঝি আর কোনও ধারণার হয় নাই। যথেচ্ছ সংরক্ষণ হইয়াছে, কিন্তু তাহাতে ফল হয় নাই। হইলে, আজ আর নূতন করিয়া সংরক্ষণের প্রয়োজন হইত না। সুপ্রিম কোর্টের বিচারক বিস্ময় প্রকাশ করিয়া জানিতে চাহিয়াছেন, কোন আইনের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় সরকার এমন একটি সংরক্ষণের পথে হাঁটিল? আইন আছে কি না, সেই প্রশ্ন ভিন্ন। কিন্তু, ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণ ভারতীয় সংবিধানের দর্শনের, অন্তর্নিহিত ভাবাদর্শের বিরোধী। স্বাধীনতা অর্জনের পর যখন নূতন ভাবে দেশ গড়িবার কাজ চলিতেছিল, তখন নেতারা সচেতন ভাবেই ধর্মকে ব্যক্তিগত পরিসরে আবদ্ধ রাখিবার কথা ভাবিয়াছিলেন। স্থির হইয়াছিল, ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে কাহারও সহিত কোনও বৈষম্য করা হইবে না, কোনও বিশেষ সুবিধাও দেওয়া হইবে না। স্বীকার করা প্রয়োজন, পরবর্তী সময়ে রাজনীতি এই আদর্শ হইতে বিচ্যুত
start_blog_img